Hotline: +8809612120202
বুটিক হাউসের আড়ালে স্বামী-স্ত্রীর স্বর্ণ চোরাচালান, অর্থ-পাচার
Back to All News

রাজধানীতে বুটিক হাউসের আড়ালে স্বর্ণ চোরাচালান ও অর্থ-পাচারসহ নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে সৈয়দ ওয়াসিকুল হক এবং শাহরুখ চৌধুরী লীনা নামে এক ব্যবসায়ী দম্পতির বিরুদ্ধে।

‘লিনাস থাউজেন্ড থিংস’ নামে একটি বুটিক হাউসের আড়ালে এ দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে দুবাই থেকে সোনা চোরাচালান ও পোশাক কেনার নামে কোটি কোটি টাকা পাচার করে আসছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

 

এসব অভিযোগের বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী কাজ শুরু করলেও এ দম্পতি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। লিনাস থাউজেন্ড থিংস নামে অনলাইন বুটিক শপটিও বর্তমানে বন্ধ আছে।

জানা গেছে, শপটির অধিকাংশ পোশাক ভারত ও পাকিস্তানের। এসব পোশাক কিনতে একাধিকবার দুবাই ভ্রমণ করেন এ স্বামী-স্ত্রী। বিভিন্ন অবৈধ চ্যানেলে শুল্ক ফাঁকির মাধ্যমে পোশাকগুলো তারা দেশে নিয়ে আসতেন।

সূত্র জানায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি দুবাই থেকে ফেরার পথে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ, বিদেশি মদ ও ১০ লাখ টাকা মূল্যের ওমেগা ব্র্যান্ডের ঘড়িসহ ইমিগ্রেশনে আটক হন লীনার স্বামী সৈয়দ ওয়াসিকুল হক। পরে বিভিন্ন মহলের সুপারিশে জরিমানা ও মুচলেকা দিয়ে মুক্তি মিললেও বিষয়টি নিয়ে তৎপরতা চালায় আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী

ওয়াসিকুল হককে ছেড়ে দেওয়া হলেও তার পাসপোর্ট ও সঙ্গে থাকা ক্রেডিট কার্ড অনুসন্ধান করে অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। লীনা সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) পিআর পাসপোর্টের অধিকারী।

এ দম্পতির পাসপোর্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রতিনিয়ত আমিরাতে যাতায়াত করতেন তারা। প্রতিবারই সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে ঢাকা ফিরতেন। এত দিন এসব বিষয় গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিতে পারলেও সম্প্রতি ওয়াসিকুল আটক হলে তাদের বিষয়ে সরব হয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।

সূত্র আরও জানায়, শাহরুখ চৌধুরী ওরফে লীনা ২০১৮ সাল থেকে বুটিক ব্যবসার আড়ালে দুবাই থেকে স্বর্ণালংকার এবং মূল্যবান জিনিসপত্র অবৈধভাবে বাংলাদেশে আনেন। মূলত হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানো হয় দুবাইয়ে। তারপর নাম মাত্র সেখান থেকে কিছু বুটিক পণ্য আনলেও বেশির ভাগই বিনিয়োগ করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। সেখানে গুড লুকস রেডিমেড গার্মেন্টস ট্রেডিং নামে তাদের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরও সন্ধান পাওয়া গেছে। যার সঙ্গে লীনা ও তার পরিবারের সদস্যরা জড়িত বলে জানা গেছে।

লীনার ক্রেডিট কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে তার বেশ কিছু ব্যাংক হিসাবেরও তথ্য পাওয়া গেছে। বেরিয়ে এসেছে অস্বাভাবিক লেনদেনের চিত্র। সেখানে দেখা যায়, গত ২২ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে একসঙ্গে ৩৪ লাখ টাকার সোনা কেনেন লীনার স্বামী। বিল পরিশোধ করা হয় ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে। একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ সোনা কেনায় তার ভিসা কার্ডে নগদ দুই হাজার ৯৭৭ সেন্ট ট্যাক্স রিফান্ড যোগ হয়।

এছাড়া ৩১ ডিসেম্বর শেখ ডেরা সিটি সেন্টারের রিভলি এন্টারপ্রাইজ নামে একটি দোকান থেকে ৩৪ হাজার ৮৫০ দিরহাম দিয়ে কেনেন লিমিটেড এডিশনের একটি দামি ওমেগা ঘড়ি। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য ১০ লাখ টাকা। আটকের পর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির খোঁজে মাঠে নামে সংশ্লিষ্টরা। যেখানে তাদের ৫০ কোটিরও বেশি সম্পদের প্রমাণ মেলে।

তাদের উল্লেখযোগ্য সম্পদের মধ্যে রয়েছে মিরপুর ডিওএইচের ২ নম্বর রোডের ১৬ নম্বর এভিনিউ রোডের ডুপ্লেক্স একটি ফ্ল্যাট, যার বাজারমূল্য ছয় কোটিরও বেশি। বনশ্রীতে ফ্ল্যাট এবং নামে-বেনামে অনেক সম্পত্তির হিসাব মিলেছে। বিদেশেও রয়েছে বড় বড় বিনিয়োগ।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে আজমাইন এলাকায় গুডলাক নামের একটি দোকানও রয়েছে তার। বিনিয়োগের সুবাদেই দুবাইয়ে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পান তারা। জহিরুল ইসলাম খন্দকার নামে লীনার স্বামী ওয়াশিকুলের বন্ধুর মাধ্যমে অবৈধভাবে অর্থ পাচার করে এ ব্যবসা গড়ে তোলেন তারা।

সূত্র আরও জানায়, রাজধানীর বিভিন্ন শপিং মলে একাধিক দোকানের পজিশন ভাড়া রয়েছে লীনার। এর মধ্যে গুলশানের পিংক সিটিতে একটি, পুলিশ প্লাজায় একটি, ধানমন্ডির অরচার্ড প্লাজায় তিনটি দোকানের সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পিংক সিটিতে লিনাস থ্যাউজেন্ড থিংস অনলাইন বুটিক শপটির মাধ্যমে তিনি ব্যবসা পরিচালনা করতেন। রাতারাতি বিদেশ পালিয়ে যাওয়ার পর পিংক সিটির দোকানটি নাম পরিবর্তন করে নতুন নামে ব্যবসা পরিচালনা শুরু করে। এটি আসলে তার দোকানের ম্যানেজার মিথুন রায়ের নামে হস্তান্তর করেন। এখন দোকানের নতুন নাম ইন্ডিয়ান ক্রিয়েশন, যা দোকানের ম্যানেজার মিথুন রায় নিজের নামে পরিচালনা করছেন।

ইমিগ্রেশন সূত্র জানায়, চোরাকারবারিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে লীনা ও তার স্বামীর পাসপোর্ট নম্বর ব্লক করা হয়। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানতে পেরে বিদেশি পাসপোর্টে ইমিগ্রেশন পার হন তারা। দেশ ছাড়ার আগে একসঙ্গে ৭৬ ভরি স্বর্ণ বিক্রি করেন তারা। দোকানের ম্যানেজার মিথুন রায় এবং পারিবারিক কেয়ারটেকার খলিলের সহযোগিতায় এসব স্বর্ণ বিক্রি করেন। লীনা দম্পতি অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বার্মুডার পাসপোর্টে ইমিগ্রেশন পার হয়েছেন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।

লীনার বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্লবী থানার মামলায় একটি গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করা হয়েছে। প্রতারণার এবং অর্থ-পাচার আইনে আরও কিছু মামলার প্রস্তুতি চলছে।

পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পারভেজ ইসলাম বলেন, লীনার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। পল্লবীর বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। স্বামী-স্ত্রী দুজনকেই গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।


Related News

সায়েম সোবহান আনভীর বাজুস সভাপতি নির্বাচিত

সায়েম সোবহান আনভীর বাজুস সভাপতি নির্বাচিত

Read More
Jewellery Industry needs unity: BAJUS President Sayem Sobhan Anvir

Jewellery Industry needs unity: BAJUS President Sayem Sobhan Anvir

Read More
স্বর্ণের জনপ্রিয়তা বাড়বে নতুন বছরে

স্বর্ণের জনপ্রিয়তা বাড়বে নতুন বছরে

Read More
Anvir new BAJUS President

Anvir new BAJUS President

Read More
  • ২২ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ১০২৫৭/-
  • ২১ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ৯৭৯১/-
  • ১৮ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ৮৩৯২/-
  • ২২ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১৮০/-
  • ২১ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১৭২/-
  • ১৮ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১৪৭/-
  • সনাতন পদ্ধতির প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ৬৭৫৬/-
  • সনাতন পদ্ধতির প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১১০/-