Hotline: +8809612120202
স্বর্ণ শিল্পের জন্য বিশেষায়িত অঞ্চল প্রতিষ্ঠার আশ্বাস শিল্পমন্ত্রীর
Back to All News

স্বর্ণ শিল্পের জন্য বিশেষায়িত অঞ্চল ও প্রয়োজনীয় নীতির আশ্বাস দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ।  

তিনি বলেছেন, দেশে অর্থনৈতিক জোন হচ্ছে।

বসুন্ধরা বা আশপাশে কোনো জায়গা ঠিক করলে সেখানে স্বর্ণ শিল্পের জন্য একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করা যায়। সরকার নীতি সহায়তা দেবে। নিয়ন্ত্রক হিসাবে করণীয়ও করবে, যা অর্থনৈতিক অঞ্চলের মতো নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির মাধ্যমে পরিচালিত হবে।

 

শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) বাজুস ফেয়ার-২০২৩ উপলক্ষে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস) আয়োজিত ‘জুয়েলারি শিল্পে সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বাজুসের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, স্বর্ণ অত্যন্ত মূল্যবান জিনিস। বিষয়টি মাথায় রেখে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বাজুস মিলে এর জন্য একটি নীতি করতে হবে। যদিও একটি নীতিমালা রয়েছে। স্বর্ণ শিল্প ওই নীতিমালার ভিত্তিতেই পরিচালিত হবে।

তিনি বলেন, যদি রিফাইনারি প্রতিষ্ঠা করতে পারি, সঠিকভাবে কাঁচামাল সরবারহ করতে পারি- তাহলে স্বর্ণ শিল্পের সম্ভাবনা রয়েছে। আমাদের দক্ষ জনশক্তি আছে, আছে বাজারও। বাংলাদেশসহ বিশ্বের যেখানে বাঙালি আছে, সেখানে স্বর্ণাংকারের চাহিদা রয়েছে। এ সম্ভাবনার কথা বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বলে থাকেন। এ জন্য প্রয়োজন ম্যাকানিজম (নীতি)।  

স্বর্ণের অলংকার ছাড়াও এক ধরনের চলমান কারেন্সি হিসেবে ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, মানুষের কাছে যখন টাকা থাকে, স্বর্ণ কিনে রাখে। যখন টাকার প্রয়োজন হয় তখন স্বর্ণ বিক্রি করে টাকায় পরিণত করে।  

বসুন্ধরার প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ভালো বলে মন্তব্য করেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ। তিনি বলেন, বসুন্ধরার চেয়ারম্যান আহমেদ আবকর সোবহান যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানে সফল হয়েছেন। কৃষিভিত্তিক, খাদ্য প্রক্রিয়া থকে শুরু করে সব ধরনের প্রতিষ্ঠান ভালো করেছে। বসুন্ধরা গ্রুপ স্বর্ণ রিফাইনারির কাজে হাত দিয়েছে, এখানেও গতি আসছে। এ খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, ৫০ বছর ধরে চেষ্টা করছেন কিছু করতে পারেনি। কিন্তু বর্তমান প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান দায়িত্ব নেওয়ার পর এখানেও গতি এসেছে। আজকের মেলার দিকে তাকালেই এটা বোঝা যায়।

সভাপতির বক্তব্যে বাজুসের প্রেসিডেন্ট সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, শিল্পমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন স্বর্ণ শিল্পের জন্য একটি নিরাপদ শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠা হবে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাজুস কমিটি মিলে প্রয়োজনীয় করণীয় ঠিক করা হবে।  এটা আমরা দ্রুত বাস্তবায়ন দেখতে চাই। 

তিনি বলেন, স্বর্ণ শিল্পের সঙ্গে ৪৪ লাখ মানুষ জড়িত।  সরকার সঠিকভাবে সহায়তা করলে এই শিল্প দেশের অন্যতম প্রধান শিল্পে পরিণত হবে। বাইরে থেকে মনে হতে পারে এই শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার জন্য কত টাকা লাগে! আমার জানামতে, ৫০ লাখ টাকা দিয়ে এই শিল্প প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। তারপর আস্তে আস্তে বড় হবে।  

‘এই শিল্পের জন্য আমাদের একটি নিরাপদ জায়গা প্রয়োজন। এ খাতের উদ্যোক্তাদের দাবি এটি। আমরা সরকারের কাছে ঢাকার মধ্যে এক হাজার থেকে তিন হাজার একরের একটি জায়গা চাই। যেখানে ১০ বছরের জন্য ট্যাক্স ফ্রি সুবিধা থাকবে। ’ যোগ করেন তিনি।

আইন সংশোধন না করলে কোনোদিনই স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধ হবে না উল্লেখ করে সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পে ৭ শতাংশের নিচে মূল্য সংযোজন হয়। স্বর্ণ শিল্পে ৫০ শতাংশ মূল্য সংযোজন করা সম্ভব। স্বর্ণে বাংলাদেশে দক্ষ জনবল আছে, দক্ষ শিল্পী আছে। আমাদের শিল্পীরা অসাধারণ ডিজাইন করে। দেশের বাজারের পাশাপাশি রফতানিও করা যাবে স্বর্ণালংকার।

বাজুস সভাপতি বলেন, একসময় সাত কোটি মানুষের খাদ্য জোগান দেওয়া সম্ভব হতো না। বাংলাদেশকে একসময় তলাবিহীন ঝুড়ি বলা হতো। বাংলাদেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এটা সম্ভব হয়েছে বাংলাদেশের মানুষের উদ্ভাবনী কর্মশক্তি ও পরিশ্রমের কারণে। আইন যুগপোযোগী করুন ও ট্যাক্স কমান- সবকিছু স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে যাবে।

এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে স্বর্ণালংকার তৈরি ও ব্যবহার আবহমান কাল থেকে। স্বর্ণালংকারের জন্য এ অঞ্চল সুনামও কুড়িয়েছে। স্বর্ণালংকারের ৮০ ভাগ তৈরি হয় ভারত ও বাংলাদেশে। এই সুনামকে কাজে লাগিয়ে স্বর্ণ শিল্পের বিকাশ সম্ভব। এটা করা সম্ভব হলে দেশের রফতানির যে লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে তা পূরণে সহায়ক হবে।

তিনি বলেন, দেশে রফতানি আয়ের ৮৩ থেকে ৮৪ শতাংশ দখল করে আছে একটি পণ্য। বাকি সব পণ্য মিলে রফতানি হয় ১৬ থেকে ১৭ ভাগ। রফতানি আয়ের যে লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে গুটিকয়েক পণ্য দিয়ে তা সম্ভব নয়। এ জন্য রফতানি পণ্য বহুমুখী করতে হবে। এক্ষেত্রে স্বর্ণ শিল্প সম্ভাবনা তৈরি করেছে। গত কয়েক বছর ধরে স্বর্ণভিত্তিক শিল্পকে এগিয়ে নেওয়ার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর গোল্ড রিফাইনারি প্রতিষ্ঠা ও বাজুসের দায়িত্ব নেওয়ার মধ্য দিয়ে সেই প্রচেষ্টা গতি পেয়েছে।

অন্যতম বড় রফতানি খাত হিসেবে স্বর্ণ শিল্পকে আবির্ভূত করতে যত ধরনের নীতি-সহায়তা প্রয়োজন সেগুলো করার জন্য সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি। 

  

বাজুসের সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, স্বর্ণ খাতের উন্নয়ন ও রফতানি করার জন্য ৫০ বছর ধরে বলে আসছি, কোনো কাজ হয়নি। যে তিমিরে ছিল, সেখানেই রয়ে গেছে। সঠিক স্বর্ণের অলংকার তৈরি করলেও আমাদের সম্পর্কে মানুষের ধারণা- ছয় আনা খাদ দিয়ে স্বর্ণ তৈরি করি। বাজুসের তরুণ ও বুদ্ধিদীপ্ত বর্তমান সভাপতি সেই অপবাদ ঘুচিয়ে স্বর্ণ শিল্পকে এগিয়ে দিতে পারবেন।

বাজুসের আরেক সাবেক সভাপতি দিলীপ কুমার বলেন, স্বর্ণ শিল্প ম্লান হয়ে যাচ্ছিলো। সরকার ২০১৮ সালে স্বর্ণ নীতিমালা করার মধ্য দিয়ে তা রক্ষা করেছে। চাহিদার প্রায় পুরোটাই আসতো চোরাই পথে। বসুন্ধরা স্বর্ণের রিফাইনারি প্রতিষ্ঠা করার পর থেকে দেশে স্বর্ণালংকারের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

সেমিনারে বাজুসের উপদেষ্টা রুহুল আমিনের পরিচালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাংবাদিক ও গবেষক রাজু আহমেদ।  


Related News

সায়েম সোবহান আনভীর বাজুস সভাপতি নির্বাচিত

সায়েম সোবহান আনভীর বাজুস সভাপতি নির্বাচিত

Read More
Jewellery Industry needs unity: BAJUS President Sayem Sobhan Anvir

Jewellery Industry needs unity: BAJUS President Sayem Sobhan Anvir

Read More
স্বর্ণের জনপ্রিয়তা বাড়বে নতুন বছরে

স্বর্ণের জনপ্রিয়তা বাড়বে নতুন বছরে

Read More
Anvir new BAJUS President

Anvir new BAJUS President

Read More
  • ২২ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ১০২৫৭/-
  • ২১ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ৯৭৯১/-
  • ১৮ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ৮৩৯২/-
  • ২২ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১৮০/-
  • ২১ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১৭২/-
  • ১৮ ক্যা: ক্যাডমিয়াম (হলমার্ককৃত) প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১৪৭/-
  • সনাতন পদ্ধতির প্রতি গ্রাম স্বর্ণের মূল্য : ৬৭৫৬/-
  • সনাতন পদ্ধতির প্রতি গ্রাম রূপার মূল্য : ১১০/-